আজকাল ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস, সিরোসিসের রোগী দিন দিন বাড়ছে। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো – লিভার খারাপ হলেও প্রথম দিকে কোনো ব্যথা বা সমস্যা বোঝা যায় না। কিন্তু শরীর ও ত্বকের মাধ্যমে কিছু লাল সংকেত দিতে থাকে। এই ৪টি লক্ষণ দেখলে আর দেরি করবেন না – তৎক্ষণাৎ লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) ও আলট্রাসনোগ্রাফি করান।
১. জন্ডিস – ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া (সবচেয়ে পরিচিত ও ভয়ানক লক্ষণ)
- চোখের সাদা অংশ ও ত্বক হলুদ হয়ে যায়
- প্রস্রাব গাঢ় হলুদ বা লালচে-বাদামী হয়
- মলের রং হালকা বা সাদাটে হয়ে যায়
কারণ: লিভার বিলিরুবিন প্রসেস করতে পারে না → রক্তে জমে ত্বক হলুদ করে। হেপাটাইটিস A/B/C, ফ্যাটি লিভার, সিরোসিস, পিত্তথলির পাথর – সবেতেই জন্ডিস হতে পারে। এটা দেখলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডাক্তারের কাছে যান।
২. ত্বকে তীব্র চুলকানি (রাতে আরও বেশি হয়)
- সারা শরীরে চুলকায়, বিশেষ করে হাত-পা, পেট ও পিঠে
- কোনো দানা-ব্রণ বা ফুসকুড়ি থাকে না, শুধু চুলকানি
- রাতে ঘুমাতে পারেন না চুলকানির জন্য
কারণ: পিত্ত লবণ (bile salts) রক্তে জমে → ত্বকে জমে চুলকানি হয়। এটা প্রায় ৭০% প্রাইমারি বিলিয়ারি কোলাঞ্জাইটিস (PBC) ও সিরোসিসের রোগীর হয়।
৩. স্পাইডার অ্যাঞ্জিওমা ও হাতের তালু লাল হয়ে যাওয়া
- মুখ, ঘাড়, বুক, কাঁধে মাকড়সার জালের মতো লাল দাগ (Spider Angiomas)
- হাতের তালু অস্বাভাবিক লাল ও গরম লাগে (Palmar Erythema)
- চাপ দিলে দাগ সাদা হয়, ছেড়ে দিলে আবার লাল হয়
কারণ: লিভার এস্ট্রোজেন হরমোন ভাঙতে পারে না → রক্তনালী ফুলে এমন দাগ হয়। এটা দীর্ঘদিনের লিভারের রোগের স্পষ্ট লক্ষণ।
৪. ত্বকে কালো দাগ ও নখের অস্বাভাবিক পরিবর্তন
- গলা, বগল, কুঁচকি, হাঁটুর পেছনে ত্বক কালো হয়ে যায়
- নখ সাদা হয়ে যায়, শুধু ডগায় গোলাপী থাকে (Terry’s Nails)
- নখে সাদা সাদা লাইন পড়ে (Muehrcke’s Lines)
কারণ: দীর্ঘদিনের প্রদাহ ও প্রোটিনের অভাবে এমন হয়।
কখন তৎক্ষণাৎ ডাক্তার দেখাবেন?
যদি এই লক্ষণগুলোর মধ্যে যেকোনো ২টি একসাথে দেখেন:
- পেট ফুলে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়া
- অতিরিক্ত দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া
- বমি হয় বা বমিতে রক্ত
- মানসিক বিভ্রান্তি বা ঘুম ঘুম ভাব
প্রতিরোধের সহজ উপায় (২০২৫-এর সেরা টিপস)
- মদ্যপান একদম বন্ধ করুন
- চিনি ও তেলে ভাজা খাবার কমান
- প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটুন
- বছরে একবার LFT + আলট্রাসনোগ্রাফি করান (৩৫ বছরের পর)
এই ৪টি লক্ষণ দেখলে আর দেরি করবেন না। লিভারের রোগ প্রথম অবস্থায় ধরা পড়লে ৯০% ক্ষেত্রেই পুরোপুরি সুস্থ হওয়া যায়। কমেন্টে বলুন আপনার কারো এমন লক্ষণ আছে কি না। শেয়ার করুন – একটা শেয়ারে একটা প্রাণ বাঁচতে পারে!

